মুখের দূর্গন্ধের কারণ,এবং মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়।

প্রিয় পাঠক আসসালামুআলাইকুম,আশা করছি আপনারা ভালো আছেন।আজ আমি আপনাদের কে  একজন ব্যাক্তিত্ববান মানুষের অস্বস্তিকর একটি সমস্যা মুখের দূর্গন্ধের কারন,মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো।আপনারা যদি আমাদের এই আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে পড়েন। 
মুখের দূর্গন্ধের কারণ এবং দূর করার উপায়।

তাহলে আরো জানতে পারবেন মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ৫টি ঘরোয়া উপায়,দূর্গন্ধ দুর করার প্রাকৃতিক উপায়,,দূর্গন্ধ দুর করার খাবার,মুখের দূর্গন্ধ থেকে বাঁচার উপায়,এবং মুখের দূর গন্ধ দূর করার মাউথওয়াশ ও ঔষুধের সম্পর্কে তাহলে চলুন আর দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

ভূমিকা:

আমাদের অনেক সময় মুখের দূর্গন্ধের কারণে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়।মানুষের মধ্যে কথা বলতে গেলে আমাদের ভয় লাগে যদি মুখ থেকে দূর্গন্ধ বের হয়।আমরা মুখের দূর্গন্ধ দূর করার জন্য দিনে দুই থেকে তিনবার ব্রাশ করার পর ও কিন্ত কোনভাবেই মুখের দূর্গন্ধ দূর করা সম্ভাব হয় না।
যার ফলে আমাদের কে মানুষের মাঝে কথা বলতে গেলে মুখ ঢেকে কথা বলা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না মুখের দূগন্ধে কারণে।তাই আমরা সাধারনত চিন্তায় পড়ে থাকি কিভাবে আমাদের মুখের দূর্গন্ধ কিভাবে চিরতরে দূর করা যায়। তাই আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা জেনে নেব মুখের দূগন্ধের কারণ,এবং মুখের দূগন্ধ দূর করার উপায় সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে।

মুখের দূর্গন্ধের কারণ:

নানান কারণে আমাদের মুখে দূর্গন্ধ হতে পারে । তবে এর মধ্যে থেকে কিছু উল্লেখ্যযোগ্য কারণ নিম্নে তুলে ধরা হলো। মুখের দূরগন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে নিম্নলিখিত:
মুখের ও দাঁতের অসম্পূর্ণ পরিচর্যা ও স্বাস্থ্যসমস্যা। মুখে ব্যাকটেরিয়া জমে যায় যা দুর্গন্ধ উৎপন্ন করে।কিছু খাবার যেমন রসুন, পেঁয়াজ, মাছ, চিজ, মশলা ইত্যাদি যা মুখে ও শ্বাসে দুর্গন্ধ ফেলে।
পানি ও পানীয় পর্যাপ্ত পরিমাণে না পান করা। এতে মুখে পানিশূন্যতা হয় ও ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়।
দীর্ঘসময় ধরে না খেয়ে থাকা। এতে মুখের PH স্তর বদলে যায় ও দুর্গন্ধ হয়।
কিছু শারীরিক রোগ যেমন ডায়াবেটিস, লিভারের সমস্যা, টনসিলজনিত সমস্যা, অ্যালার্জি, ল্যাকটোস ইনটলারেন্স ইত্যাদি যা মুখের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।
ধূমপান করা। এতে মুখের থুথু কমে যায় ও ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যায়।
মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাসগত সমস্যা। এতে মুখের পানিশূন্যতা হয় ও দুর্গন্ধ বের হয়।

মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়:

মুখের দূগন্ধ দূর করার জন্য আপনি বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করতে পারেন। একটি ভিডিওতে ডা. তাসনিম জারা এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, যা আপনি দেখতে পারেন।এছাড়া আমি ওয়েব থেকে কিছু উপায় খুঁজে বের করেছি, যেগুলো হলঃ
ফ্লোরাইড টুথপেষ্ট দিয়ে দিনে দুইবার দাঁত ও জিহ্বা ব্রাশ করুন।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন, যাতে মুখে পানিশূন্যতা না হয়।
চুইঙ্গাম খাওয়ার অভ্যাস করুন, যাতে মুখে লালা সৃষ্টি হয় ও ব্যাকটেরিয়া দূর হয়।
মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখ পরিস্কার করুন, যাতে মুখের এসিডিটি কমে ও দুর্গন্ধ দূর হয়।
নি:শ্বাসে দুর্গন্ধ তৈরি করে এমন খাবার যেমন রসুন, পেঁয়াজ, মাছ, চিজ, মশলা ইত্যাদি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
ধূমপান ত্যাগ করুন, যাতে মুখের থুথু কমে ও ব্যাকটেরিয়া বেড়ে না যায়।
লবঙ্গ, লেবুর রস, দারুচিনি, মধু, পুদিনাপাতা, মেথি বীজ, বেকিং সোডা, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে মুখ কুলকুচি করুন বা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।আশা করি এই উপায়গুলো আপনার মুখের দূগন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে।

মুখের দূগন্ধ দূর করার ঘরোয়া ৫টি উপায়: 

মুখের দূগন্ধ দূর করার ঘরোয়া ৫টি উপায় হলো:
  • দিনে অন্তত দুবার দাঁত ব্রাশ করুন। এতে মুখের জীবাণু ও ময়লা দূর হবে। বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত মাজলে আরও ভালো হবে। 
  • জিভ পরিষ্কার করুন। জিভে অনেক রোগজীবাণু থাকতে পারে যা দূর্গন্ধ সৃষ্টি করে। তাই প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার সময় জিভটাও পরিষ্কার করুন।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পানি পান করলে মুখের আদ্রতা বজায় থাকে এবং দূর্গন্ধ কমায়।
  • চুইংগাম খাওয়ার অভ্যাস করুন। চুইংগাম খেলে মুখে লালা সৃষ্টি হয় যা ব্যাকটেরিয়া ও খাদ্যকণা দূর করে।
  • চা পান করার অভ্যাস করুন। চায়ে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে যা দূর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

মুখের দূগন্ধ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়: 

মুখের দূগন্ধ দূর করার জন্য আপনি নিম্নলিখিত কিছু প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ করতে পারেন:

দারুচিনি: দারুচিনিতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে, যা মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে ব্যাকটেরিয়াগুলি মেরে ফেলে। আপনি মুখে কিছু দারুচিনি রেখে দিতে পারেন অথবা দারুচিনি দিয়ে চা বানিয়ে পান করতে পারেন।

লবঙ্গ: লবঙ্গ দাঁতের জন্য ভালো হয়, কারণ এতে দারুচিনির মতো অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। এছাড়া লবঙ্গ মাড়ি ফোলা, দাঁতের রক্তপাত ও দাঁতের ক্ষয় রোধে সাহায্য করে। আপনি মুখে কিছু লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা লবঙ্গ, দারুচিনি ও মধু দিয়ে চা বানিয়ে পান করতে পারেন।

লেবুর রস: লেবুর রসে ভিটামিন সি ও অ্যাসিটিক অ্যাসিড থাকে, যা মুখের জীবাণুগুলি মেরে ফেলে। আপনি দৈনিক অল্প পরিমাণ লেবুর রস খেতে পারেন অথবা লেবু, লবণ ও পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে পান করতে পারেন।

লবণপানি: পানি কম পান করার ফলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। দৈনিক যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করলে মুখের জীবাণুগুলি মুখ থেকে বেরিয়ে আসে। আরও বেশি উপকার পেতে চাইলে এক গ্লাস পানিতে হাফ চামচ লবণ মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।

ধনিয়া ও পুদিনা পাতা: ধনিয়া ও পুদিনা পাতা সাময়িকভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। আপনি কিছু ধনিয়া ও পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।

মুখের দগন্ধ দূর করার খাবার: 

আপনি জানেন কি মুখের দূর্গন্ধ দূর কারার জন্য কোন কোন খাবার খেতে হয়। আপনি ঘরে বসে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়ায় নিমিষে আপানার মুখের দূর্গন্ধ দুর করে ফেলতে পারেন।আপনি যদি মুখের দূর্গন্ধ দূর খাবার সম্পর্কে না জেনে থাকেন।তাহলে চিন্তা কোণ কারণ নেই আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেব কোন কোন খাবার গুলো মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক মূখের দূর্গন্ধ দূর করার খাবার সম্পর্কে:
  • আনারসের জুস
  • মধু
  • দুধ
  • কমলা
  • গ্রিনটি
  • আপেল
  • গাজর
  • রোজমেরী
  • পেয়ারা
  • লবঙ্গ
  • মৌরি
  • আদা
  • আপেল সিডার ভেনেগার
  • ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি, জাতীয় খাবার খেলে মূখের দূর্গন্ধ দূর হয়।

মুখের দূর্গন্ধ থেকে বাঁচার উপায়: 

খাবার খাওয়ার পর পানি পান করুন অথবা কুলি করুন মুখে দুগন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, শারীরিক কিছু রোগ এবং মুখ ও দন্ত রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। মুখে দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে আপনি দৈনিক কম করে হলেও ৩ থেকে ৪ লিটার গ্লাস পানি খেতে হবে। ফলমূল, শাকসবজি, দইজাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত। 
লেবু, জাম্বুরা, কমলা, কামরাংগা, মাল্টা ও আনারসের শরবত পান করা উচিত। গাজর, শসা, টমেটো, আমড়া ও আমলকি ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। মুখ ও দাঁতের সঠিক পরিচর্যা করা উচিত। খাবারের পর ৩০-৬০ মিনিট আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, ব্রাশ করার জন্য যেন প্রাকৃতিক উপায়ে থুথুর মাধ্যমে খাদ্য পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে ও মুখের নরমাল PH বহাল থাকে। 
খাবারের পরপরই মুখের PH এসিডিক থাকে, খাবার পর থুথু প্রথম মুখের PH নরমাল করে। তাই খাবারের পরপরই দাঁত ব্রাশ করার ফলে এনামেলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপরদিকে এসিডিক PH -এ ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন হার বেশি। অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। প্রতি রাতে ১ বার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে।

মুখের দূর গন্ধ দূর করার মাউথওয়াশ:

কিছু মাউথওয়াশ মুখের দূগন্ধ কে ছাপিয়ে যেতে সাহায্য করে।আবার কিছু মাউথওয়াশ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপন্ন সালফারের গন্ধ কে নিস্ক্রিয় করে।মুখ থেকে অনেক সময় দূর্গন্ধ বেরহলে সিটাইলপাইরিডিনিয়ামের মতো এন্টিসেপ্টিক এবং থাইমল বা মেনথলের মতো এসেনসিয়াল অয়েল আছে এমন মাউথওয়াশ ব্যবহার করে দেখতে পাড়েন।
মুখের শুস্কতা অনেক সময় মুখের দূর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে।যদি মুখের ভেতর লালার ঘাটতি হলে মুখের ভেতরে স্তরে ডেমেজ হয় ও দাঁত ক্ষয়ে যায় এর ফলে মুখের ভেতর ‍দূর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।স্যালাইভ রিপ্লেসমেন্ট স্প্রে অথবা ময়েশ্চারাইজিং মাউওয়াশের ব্যবহারে মুখের দূর্গন্ধ দূর হতে পারে।

মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ঔষুধের নাম:

আপনারা অনেক সময় মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ঔষুধের নাম জানতে চান।তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে একে একে জেনে নেব মুখের দূর্গন্ধ দূর করার এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক ঔষুধ সম্পর্কে।প্রথমে আসা যাক এলোপ্যাথিক ঔষুধ সম্পর্কে।
এলোপ্যাথিক ঔষুধ:
আসলে মুখের দূর্গন্ধ দুর করার জন্য আলাদা কোন এলোপ্যাথিক ঔষুধ নেই।মুখের দূর্গন্ধের ঔষুধ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের প্রথমে কোণ একটি অভিজ্ঞ ডেন্টিস্ট এর কাছে যেতে হবে তিনি তার পরীক্ষা নিরীক্ষর মাধ্যমে উদঘাটন করতে পারবে কোন কারণে মুখে দূর্গন্ধ হচ্ছে।ডেন্টিস যদি পরীক্ষা ফলাফল দেখে মনে হয় মুখে বা পেটের কোন সমস্যার মুখে দূর্গন্ধ হচ্ছে তাহলে সে অনুপাতে ঔষুধ খেতে বলবে।
হোমিও ঔষুধের নাম:
এবার জেনে নেয়া যাক হোমিও ঔষুধের নাম সম্পর্কে। মুখের দূর্গন্ধ দূর কারার জন্য বেশ কয়েক টি হোমিও ঔষুধ রয়েছে যেমন:এসিড নাইট,সিফিলিনাম,অরাম,কার্বোভেজ,মাকুৃরিয়াস সল ।

শেষ কথা:

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা আমাদের এই  মুখের দূর্গন্ধ সম্পর্কিত আর্টিকেল টি পড়ে আপনাদের প্রয়োজনীয় বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে গেছেন।আপনাদের যদি এই আর্টিকেল সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকে এবং আপনাদের কাছে যদি আমাদের এই আর্টিকেল ভালো লেগে থাকে। 
তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url