লিভার সিরোসিস কি?লিভার সিরোসিস রোগের কারণ,লিভার সিরোসিস রোগের লক্ষণ

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদেরকে  মানব দেহের জটিল এবং মারাত্মক রোগ লিভার সিরোসিসের রোগের কারণ এবং লিভার সিরোসিস রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানাবো। আপনারা যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেলের সঙ্গে থাকেন। 
লিভার সিরোসিস কি?লিভার সিরোসিস রোগের কারণ,লিভার সিরোসিস রোগের লক্ষণ

তাহলে আপনারা আরো জানতে পারবেন,  লিভার সিরোসিস  রোগ কি?, লিভার সিরোসিস রোগ থেকেমুক্তির উপায়, এবং লিভার সিরোসিস রুগীর খাবার সম্পর্কে।  আপনার যদি লিভার সিরোসিস রোগ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে কোন ধারনা না থেকে থাকে , তাহলে মনোযোগ সহকারে এই পোস্টটি পড়ুন। এবং লিভার সিরোসিস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। 

ভূমিকা :

আমাদের মাঝে অনেকেই অনেক রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে। এক এক জনের রোগ এক এক রকম হয়ে থাকে। আমরা বাস্তবে কেউ পরিপূর্ণভাবে সুস্থ বোধ করি না।কারণ সবারই কিছু না কিছু সমস্যা আমাদের  দেহের মধ্যে বাসা বাঁধে। এ সমস্যাগুলো আমাদের মধ্যে কেউ কেউ সনাক্ত করতে পেরে  যথাযথ চিকিৎসা নিতে পারে।
আবার কেউ কেউ বুঝতেই পারে না যে তার দেহের কোন রোগের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ তারা সেই রোগের লক্ষণগুলোকে অবহেলা করে। এতে করে পরবর্তীতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই বিভিন্ন ধরনের রোগের মধ্যে অন্যতম রোগ হল লিভার সিরোসিস রোগ। যার কথা শুনলেই আমরা আঁতকে উঠি। আজকের এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে চলেছেন এই মরণঘাতী রোগের সম্পর্কে।

লিভার সিরোসিস কি? 

লিভার সিরোসিস হচ্ছে লিভারের অনিরাময় যোগ্য, মারাত্মক রোগ। তবে এর বিরুদ্ধে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই রোগটিকে দূরে রাখা সম্ভব। লিভার সিরিসস যকৃৎ বলা লিভার কোষ গুলো কে এমনভাবে ক্ষতি করে ফেলে যা লিবারের বিকৃতি এবং অকর্যকর হয়ে পড়ে।এবং প্রদাহের সৃষ্টি করে। 
আর এই প্রদাহর কারণে লিভারে ফাইব্রোসিস , নডিউল, বা গুটি গুটি মত এক ধরনের জিনিস তৈরি হয়। ফলে লিভারের যে স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা যেমন বিপাকক্রিয়া, পুষ্টি উপাদান সঞ্চয়, ঔষধ ও নানা রাসায়নিক শোষণ, রক্ত জমাটে বাধা দান করা সমস্ত কাজকে ব্যাহত করে। এর ফলে দেখা দেয় নানা রকম সমস্যা। 
আবার কিছু জন্মগত সমস্যার কারণেও যেমন ওয়াইলসন ডিজিজ,হেমোক্রোমেটাসিন ইত্যাদি। এই রোগ এত বেশী মারাত্মক যে মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। তাই আমাদের আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। 

লিভার সিরোসিস রোগের কারণ :

লিভার সিরোসিসের কারণ এক কথায় বলে ব্যক্ত করা যাবে না,বিভিন্ন দেশে লিভারসিসের কারণ বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে পাশ্চাত্য দেশে লিভার সিরোসিস এর প্রধান কারণ অ্যালকোহল বা নিশা জাতীয় পণ্য। আবার আমাদের দেশে লিভার সিরোসিসের প্রধান কারণ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস, হেপাটাইটিস ডি, হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমনের কারণে সাধারণত মানুষের লিভার সিরসিস রোগ হয়।


এবং পরের ধাপ ফ্যাটি লিভার। ফ্যাটি লিভার নানা কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশ্চাত্যে পরিচালিত গবেষণা এবং ইন্টারনেটের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ পরবর্তীতে জটিল লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয় ।

নিম্নে লিভার সিরোসিস কিছু কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

অনেকগুলো কারণে মানুষের শরীরে লিভার সিরোসিস হয়। তবে আমাদের দেশের জন্য যেসব কারণে লিভার সিরোসিস হয় তার মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে ক্রনিক হেপাটাইটিস বি , হেপাটাইটিস সি। আমাদের শরীরে যখন অনেক দিন ধরে বি ভাইরাস এবং সি ভাইরাস থাকে। তখন এগুলো লিভার সিরোসিসের দিকে ধাবিতো করে। 
সাধারণত ভাইরাস গিয়ে লিভারে এফেক্ট করার পর লিভার সিরোসিস হতে আরও ১০ থেকে ১৫ বছর সময় লাগে। আমাদের কারো শরীরে যদি ভাইরাস বি ও ভাইরাস সি এর উপস্থিতি বোঝা যায় তাহলে অবশ্যই আমাদের চিকিৎসা করা উচিত । 
এরপরের ধাপ হচ্ছে ফ্যাটি লিভার। ফ্যাটি লিভার আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে। 
  • অ্যালকোহলিক
  • অ্যালকোহলিক।

  • অ্যালকোহলিক লিভার সিরোসিস : অ্যালকোহলিক মানে যারা অ্যালকোহল জাতীয় অনেক বেশি পরিমাণ খেয়ে থাকে এবং অনেকদিন ধরে খাই। অ্যালকাহল থেকে লিভার সিরোসিস টান নিতে পারে।

  • নন অ্যালকোহলিক লিভার সিরোসিস:নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হল যাদের ওবেসিটি আছে, ওজন অনেক বেশি, হাইপারটেনশন আছে,যাদের ডায়াবেটিস আছে, যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, এ সমস্ত কারণ বা হরমোনাল কারণেও ফ্যাটি লিভার হয়।আর এই ফ্যাটি লিভারের যদি চিকিৎসা করা না হয়। তাহলে প্রাণঘাতী রোগ লিভার সিরোসিসের দিকে চলে যেতে পারে।

  • উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ব্যাধি :কিছু রোগ আছে যেগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া যেমন হেমাক্রোমাটোসিস বা উইলসন রোগ , আক্রান্ত রোগীরা উত্তরাধিকার সূত্রে তাদের খাদ্য থেকে আরও লোহার শোষণকারার প্রবণতা পায় । এই আয়রন জমা হয়ে রোগীর শরীরে অনেক অঙ্গের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে এবং লিভার সিরোসিস, আর্থাইটিস, হার্ট ফেইলিওর, যৌন ক্ষমতার ক্ষতি ও অন্যান্য রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

  • অটোইমিউন হেপাটাইটিস :এই রোগটি এমন একটি রোগ যা আমাদের পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই বেশি আক্রান্ত হয়।অটোইমিউন হেপাটাইটিসের , একটি অস্বাভাবিক ইমিউন কার্যকলাপের মাধ্যমে লিভারের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং লিভারের কোষগুলোকে ধ্বংস করতে পারে।ফলে লিভার সিরোসিস হতে পারে।

  • এমন কিছু ওষুধ আছে যার কারণে লেবাসে যেতে পারে।অনেকেই স্ক্রিন ডিজিজের জন্য যে ওষুধগুলো খাই, আবার অনেকে আর্থ্রাইটিসের জন্য যে ওষুধগুলো অনেকে লং টাইম ধরে সেবন করতে থাকে তাদের লিভার সিরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এছাড়া আরো অন্যান্য ঔষুধ আছে যেমন প্যারাসিটামল ওমিওডেরন এজাতীয় ঔষধ যারা খান তাদের রেগুলার ফলোআপে থাকতে হবে।লিভার ঠিকঠাক আছে কিনা লিভার সিরোসিসের দিকে যাচ্ছে কিনা সেজন্য রেগুলার ফলোআপে থাকতে হবে।

  • পিত্তনালীর কাজ হল যকৃত থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে পৃ্ত্ত (একটি পরিপাক তরল) বহন করা। যদি কোন কারনে পৃত্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত বা ব্লক হয়ে যায়, তখন পিত্তগুলো শুধু লিভারে জমা হয় যা থেকে লিভার সিরোসিস হতে পারে। গলস্টোন,বা সিস্টিক ফাইব্রোসিসের এর মত রোগ পিত্তনালীর ক্ষতি করতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক শিশু পিত্তনালী ছাড়া জন্মগ্রহণ করে শেষ পর্যন্ত তাদের শরীরের মধ্যে লিভার সিরোসিসের বিকাশ ঘটে।

লিভার সিরোসিস রোগের লক্ষন :

লিভারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষতি না হওয়া পর্যন্ত বাহ্যিকভাবে এই রোগের লক্ষণ সাধারণত প্রকাশ পায় না ।লিভার সিরোসিস রোগের লক্ষণ সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো : 
  • ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া যাওয়া।
  • সহজে রক্তপাত হওয়ার ক্ষত সৃষ্টি হওয়া।
  • বমি বমি ভাব। 
  • ক্লান্ত,
  • চুলকানি,
  • ক্ষুধা কমে যাওয়া, 
  • ওজন কমে যাওয়া, 
  • হাতের পাতা লাল হয়ে যাওয়া, 
  • পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া যা ইডিমা নামে পরিচিত। 
  • অ্যাসাইটিস বা পেটে পানি জমা ।
  • মেয়েদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া,
  •  ঝিমুনি ভাব,
  •  বিভ্রান্তি এবং কথার সাথে কথা জড়িয়ে যাওয়া।

লিভার সিরোসিস রোগের ঔষধ :

লিভার সিরোসিসের চিকিৎসা তার অন্তর্নিহিত কারণ পরিচালনা, জটিলতা প্রতিরোধ এবং লিভারের কার্যকারীতাকে সমর্থন করার উপর দৃষ্টি নিবন্ধ করে। যদিও নির্দিষ্ট ওষুধগুলোর কারণ এবং পৃথক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে পরিবর্তন হতে পারে, এখানে লিভার সিরোসিসের জন্য কিছু সাধারন ভাবে ওষুধ ব্যবহৃত রয়েছে। 

  • মূত্র বর্ধক:মুত্রবর্ধক,যেমন স্পিরোনোল্যাকটোন বা ফুরোসেমাইড,তরল ধারণ (এডিমা)পরিচালনা করতে এবং পা ও পেটে ফোলা ভাব কমাতে নির্ধারণ হতে পারে ।
  • বিটা ব্লোকার :প্রোপ্রানোলল বা নাডোললের মত বিটা ব্লকার গুলো পোর্টল হাইপার টেনশন কমাতে নির্ধারিত হতে পারে, যা লিভারের পোর্টল ভেইন সিস্টেমের মধ্যে রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। বিটা ব্লকার খাদ্যনালী বা পাকস্থলীতে বর্ধিত শিরা থেকে রক্তপাত রোধ করতে সাহায্য করে ।
 
  • ল্যাকটুলোজ:ল্যাকটুলোজ একটি ওষুধ যা হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, এমন একটি অবস্থা যা উন্নত লিভারের রোগ ঘটাতে পারে। এটি মলের মাধ্যমে অ্যামোনিয়া নিঃসরণ প্রচার করে এবং রক্তে বিষাক্ত পদার্থের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

  • এন্টিভাইরাল ওষুধ :যদি লিভার সিরোসিস দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি বা সি সংক্রমনের কারণে হয় , তবে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলি ভাইরাল প্রতিলিপি কে দমন করতে , প্রদাহ কমাতে এবং লিভারের ক্ষতির অগ্রগতিকে ধীর করার জন্য নির্ধারিত হতে পারে।

  • Ursodeoxycholic Acid(UDCA):UDCA মাঝে মাঝে প্রাইমারি বিলিয়ারি কোলাঞ্জাটিসেসে ব্যবহৃত হয়, একটি অটোইমিযউন লিভার ডিজিজ।এটি লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং রোগের অগ্রগতি কমাতে সাহায্য করে।

  • ইমিউনোসপ্রেসেন্টস:অটোইমিউন হেপাটাইটিস প্রিডনিসন ও অ্যাজাথিওপ্রিনের মত ইমিউনোসপ্রেসিভ ওষুধগুলো লিভারের কোষগুলিতে ইমিউনসিস্টেমের আক্রমণ দমন করতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। 

এটি লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ যে এই ওষুধগুলি ব্যবহার স্বতন্ত্র পরিস্থিতি এবং লিভার সিরোসিসের নির্দিষ্ট কারণের উপর ভিত্তি করে একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার দ্বারা নির্ধারণ করা উচিত। চিকিৎসার পরিকল্পনার মধ্যে খাদ্য তালিকা গত পরিবর্তন, জীবনযাত্রা পরিবর্তন, এবং লিভারের কার্যকারিতা নিবিড় পর্যবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। 
ওষুধের কার্যকারিতা মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় করতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সাথে নিয়মিত ফলোআপ অ্যাপয়েন্টমেন্ট অপরিহার্য। 

লিভার সিরোসিস রোগ থেকে মুক্তির উপায় :

চিকিৎসকদের মতে লিভার এমন একটি অঙ্গ যার অনেকটি অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও একটু নিয়ম করে চললে আবার লিভারের স্বাস্থ্য ফড়ানো সম্ভব। আমদের কে একটু সতর্কতা অবলম্বন করলে লিভার সিরোসিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 
নিম্নে তা আলোচনা করা হলো। লিভার সিরোসিসির অন্যতম কারণ হলো 

  • এ্যালকাহল জাতীয় পণ্য অতিরিক্ত সেবন করা এবং মদ্যপান অতিরিক্ত করা। তাই লিভার সিরোসিস থেকে মুক্তি পেতে হলে অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। 

  • সহজপচ্য খাবার :হজম শক্তিকে বাধা দেবে না এমন কোন খাবারের অভ্যাস আছে কি? অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের কবলে পড়ে প্রায় প্রতিদিনই তৈলাক্ত খাবার, অতিরিক্ত পরিমাণে ঝাল মসলাযুক্ত খাবার আমরা অনেকেই গ্রহণ করে থাকি। এর ফলে সিরোসিস অব লিভারের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটাই । তাই মসলাযুক্ত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড পরিত্যাগ করে। বিভিন্ন শাকসবজি, কম তেল মশলা যুক্ত খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হতে হবে ।

  • প্রক্রিয়াজাত খাবার :দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা খাবারের অভ্যস্ত আমরা, যদি তাই হয় তাহলে আজই এই অভ্যাস কে পরিত্যাগ করুন। বোতল বা টিনজাত খাবারের লিভার সিরোসিসের অন্যতম কারণ। তাই প্রিজারভেটিভ বা সংরক্ষণক্ষম খাবার অর্থাৎ সস, বোতল জাত ফলের রস, কোল্ড ড্রিংকস, বেকারিজাত স্ন্যাক্স এই সমস্ত খাবার যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলুন। 

  • ব্যথা নাশক:শরীরে কোথাও ব্যথা হলে আমরা তো সহ্য করতে না পেরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা নাশক ওষুধ খেয়ে থাকি।যা লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ব্যাথা নাশক ঔষধ এর ব্যবহৃত বিভিন্ন যৌগ আমাদের লিভারে কর্ম ক্ষমতা কে নষ্ট করে দেয় এবং লিভারে ক্ষতিসাধন করে তাই কখনো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথা নাশক ঔষধ খাওয়া ঠিক নয়।

  • কায়িকশ্রম:সারাদিন আমরা কতক্ষণ হাঁটাহাঁটি করি? এবং কি কি কাজ করি? সেটা খেয়াল করতে হবে। শারীরিক শ্রম শরীরের মেদ জমতে দেয় না। ফলের লিভারের ফ্যাট জমা হয় না এবং লিভার সুস্থ থাকে।

  • সঠিক পরিমাণে পানি পান :শরীরের ঠিক কতটুকু পানি দরকার ঠিক সেই পরিমাণ পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে। পানি শরীরের টক্সিন কে সরিয়ে দেয় শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত। 

  • পেঁয়াজ রসুন :কাঁচা পেঁয়াজ এবং কাঁচা রসুন শরীরের ভেতরে জমে থাকা টক্সিন কে দিতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন এর খাবার মেনুতে কিছুটা কাঁচা পেঁয়াজ এবং কাঁচা রসুন রাখুন। 
  • হেপাটাইটিস বিএর টিকা দিতে হবে। 

  • অনিরাপদ যৌনতা একই সুই বা সিরিঞ্জ বহুজনের ব্যবহার পরিহার করতে হবে। 

  • নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন ও ডিজপজেবল সুই ব্যবহার করুন। 

  • একই ব্লেড, রেজার, ব্রাশ, ক্ষুর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

লিভার সিরোসিস রুগীর খাবার:

  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাশরুম , স্পিরুলিনা
  • সবুজ শাকসবজি
  • আঁশযুক্ত ফল ,
  • সকল প্রকারের মাছ বিশেষ করে যেগুলো তেল সমৃদ্ধ মাছ এবং সামুদ্রিক মাছ,
  • হাঁস মুরগি কবুতর কোয়েল পাখির মাংস,
  • গরু খাসির মাংস চর্বি ছাড়া এবং পরিমাণ মতন , 
  • সালাত,
  • বাদাম 
  • গ্রিন টি, 
  • ভাত রুটি পরিমাণ মত
  • নুডুলস পাস্তা পছন্দ মতন,
  • ডিম প্রত্যেকদিন চার থেকে ছয়টি কুসুম সহ,
  • দুধ কিংবা দুধের তৈরি টক দই, লাচ্ছি, গোল, মাঠা,
  • লবণ 
  • পনির ঘি মাখন, 
  • প্রোবাইটিক জাতীয় খাবার যেমন আচার খাওয়া যাবে, 
  • লবণ বাজে তেল ও অধিক শর্করা,
  • ধূমপান, মদ্যপান একেবারেই নিষিদ্ধ। 

লেখকের মন্তব্য :

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে, লিভার সিরোসিস কি এবং লিভার সিরোসিস হলে শেষ পরিণতি কি হতে পারে সে সম্পর্কে। এর জন্য লিভারে কোন সমস্যাকেই আমাদের ছোট করে দেখা উচিত না । লিভারে যেকোনো সমস্যায় হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কারণ এই ছোট সমস্যা একদিন বড় হয়ে দেখা যেতে পারে।আশা করছি আপনারা এই আটিকেলের বিষয়বস্তুগুলো পড়ে উপকৃত হয়েছেন। আপনাদের যদি লিভারের সমস্যা নিয়ে আরো কিছু জানা থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা তা অবশ্যই আপনাদের মাঝে জানানোর চেষ্টা করব। ধন্যবাদ আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url