ডুমুর এর উপকারিতা ও ডুমুরের পুষ্টিগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন ।

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আশা করছি আপনারা ভালো আছেন আজ আমি আপনাদের কে বহুগুনে ভরপুর ডুমুরের উপকারিতা,ও ডুমুরের পুষ্টিগুন সম্পর্কে আলোচনা করবো ।আপনারা যদি শূরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেলের সঙ্গে থাকেন।
ডুমুর এর  উপকারিতা ও ডুমুরের পুষ্টিগুন

তাহলে আপনারা আরো জানতে পাড়বেন ডুমুর খাওয়ার অপকারিতা,ডুমুর রান্না করার পদ্ধতি,ডুমুর কি কি রোগ নিন্ত্রয়ণ করে, এবং ডুমুরের ফল চেনার উপায় সম্পর্কে তাহলে চলুন আর দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

ভূমিকা:

ডুমুর নরম ও মিষ্টিজাতীয় ফল।ফলের উপরিভাগ খুবই পাতলা হয় এবং ভেতরের অংশে ছোট ছোট বীজ দ্বারা ভরপুর। ডুমুরের ফল শুকনো এবং পাকা অবস্থায় খাওয়া যায়। উষ্ণ প্রধান দেশে এ জাতীয় গাছ জন্মে।ডুমুর আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রামঞ্চলে খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ফল।
আবার এই ফলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন ।আপনি যদি আপনার  খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ডুমুর ফল খান তাহলে বিভিন্ন জটিল ও মারাত্নক রোগ হতে মুক্তি পেতে পারেন।

ডুমুর এর উপকারিতা:

ডুমুর এর উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।তারপর ও ডুমুর এর উপকারিতা ,অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার।বিশেষ করে পুরুষদের যৌনরোগ থেকে শুরু করে মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এই ডুমুরের মধ্যে রয়েছে। তাই আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা,পুষ্টিগুন সহ বিভিন্ন গুন সম্পর্কে আলোচনা করবো। 
ডুমুর হল একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল, যা বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ হিসাবে কাজ করে । ডুমুরের কিছু  উপকারিতা নিম্নে আলোচনা করা হলো:
  • ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, ক্যানসার এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
  • ডুমুরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা র‍্যাডিকেল এবং ক্রনিক প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগ, ক্যানসার, আলজাইমার এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
  • ডুমুরে রয়েছে পটাশিয়াম, যা রক্তে সোডিয়ামের ভারসাম্য রাখে এবং রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • ডুমুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের গঠন এবং ক্ষয়রোধ করে এবং অস্থির সমস্যা এবং অস্থির সমস্যা প্রতিরোধ করে।
  • ডুমুরে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরের বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফেলে এবং হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। 
  • যারা ডায়েটে আছে এবং চিনি ছাড়তে হিমশিম খাচ্ছে তারা সহজে চিনির চাহিদা মিটাতে পাকা বা শুকনো ডুমুর ফল খেতে পাড়েন।
  • ডুমুর পুরুষের বন্ধ্যাত্বের ঝুকি কমাতে ও শুক্রাণর গননা বাড়াতে সাহায্য করে। 
  • রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে শরীরে রক্তশূনতা দেখা দেয়।আর এই হিমোগ্লোবিনের মাত্র ঠিক রাখতে এবং শরীরে রক্তশূন্যতা দূর করতে ডুমুর খাওয়া প্রয়োজন।
  • ডুমুরের ফল সবজি বা ফল হিসাবে খাওয়া তো যায়। এছাড়া ডুমুরের পাতা গোখাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ডুমুরের পাতা শিং ও মাগুর মাছ পরিস্কার করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
  • প্রতিদিন নিয়মিত পরিমানে ডুমুর খেলে ইনসুলিনে মাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরূ করে। এতে করে ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে। 
  • ডুমুর দুধের সাথে সিদ্ধ করে ফোঁড়ার উপড় প্রোলেপ লাগালে ফোঁড়া পেঁকে যায়।ফলে দ্রুত ফোঁড়ার অসহ্য যন্ত্রনা থেকে মুক্তি মিলবে।

ডুমুরের অপকারিতা: 

  • যাদের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি এড়িয়ে চলা উচিত।কারণ ডুমুরের আঠা শরীরে লাগলে এলার্জি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ডুমুর খেলে শরীরের রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে রক্তচাপ কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
  • ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ডুমুর খেলে ডায়রিয়া হতে পারে। 
  • এটি হজমশক্তি ক্ষয় করে এবং শরীরের পানি ও লবণের অভাব সৃষ্টি করে।
 সুতরাং, ডুমুর খাওয়ার সময় মাত্রা ও মান নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

ডুমুর রান্না করার পদ্ধতি:

ডুমুর একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, যা বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। ডুমুরের রান্না করার কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা হলো:
ডুমুরের ভাজি: ডুমুরগুলি ধুয়ে কাটা দিয়ে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, লবণ, হলুদ, মরিচ এবং তেল দিয়ে ভাজুন। পরিমাণ মতো পানি দিয়ে সিদ্ধ করুন।

ডুমুরের ভর্তা: ডুমুরগুলি ধুয়ে চুলায় রাখুন এবং পাকিয়ে নিন। তারপর ডুমুরগুলি মাখা দিয়ে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, লবণ, মরিচ, ধনে পাতা, সরিষা তেল এবং টক দই দিয়ে ভর্তা করুন। 

ডুমুরের ডালনা: ডুমুরগুলি ধুয়ে কাটা দিয়ে চিংড়ি মাছ, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, লবণ, হলুদ, মরিচ, গরম মশলা, তেল এবং পানি দিয়ে ডালনা রান্না করুন।

ডুমুরের বড়া: ডুমুরগুলি ধুয়ে কাটা দিয়ে বেসন, পেঁয়াজ, লবণ, মরিচ, সোডা এবং পানি দিয়ে বাটার তৈরি করুন। তারপর তেলে বড়া ভেজে নিন।

ডুমুর খাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল এটি শুকিয়ে রাখা এবং সাধারণ ফল হিসেবে খাওয়া। আপনি এটি দিয়ে মিষ্টি, শরবত, স্যালাড বা তরকারি তৈরি করতে পারেন।

ডুমুরের পুষ্টিগুন :

ডুমুর একটি পুষ্টিকর ফল, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারি ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।নিম্নে ডুমুরের কিছু পুষ্টিগুন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
  • ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, ক্যানসার এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
  • ডুমুরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা র‍্যাডিকেল এবং ক্রনিক প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগ, ক্যানসার, আলজাইমার এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
  • ডুমুরে রয়েছে পটাশিয়াম, যা রক্তে সোডিয়ামের ভারসাম্য রাখে এবং রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • ডুমুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের গঠন এবং ক্ষয়রোধ করে এবং অস্থির সমস্যা এবং অস্থির সমস্যা প্রতিরোধ করে।
  • ডুমুরে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরের বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফেলে এবং হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়।
  • ডুমুর রক্তচাপ এবং বার্ধক্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম, লোহা, ইস্ট্রোজেন ইত্যাদি পাওয়া যায়।
  • ডুমুর রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ হ্রাস করে, যা হৃদরোগের জন্য দায়ী।
  • ডুমুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় র‍্যাডিকেল এবং ক্রনিক প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস সহ দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য দায়ী।
  • ডুমুর রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, কারণ এতে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও পটাশিয়াম পাওয়া যায়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাসে সহায়তা করে।
  • ডুমুর ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ায় পাচন ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
  • ডুমুর মহিলাদের স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর, কারণ এই ফলটি আঁশ সমৃদ্ধ।
  • ডুমুর আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হলেও, এটি মধ্যমাত্রে খাওয়া উচিত।কারণ অতিরিক্ত ডুমুর খাওয়া ফলে পেটের ব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 

ডুমুর চেনার উপায় :

ডুমুর চেনার উপায় হলো এর ফল, পাতা ও গাছের আকৃতি দেখে। ডুমুরের বিভিন্ন প্রজাতির ফল আকার, রং ও স্বাদে ভিন্ন হয়। যেমন:

মিশরীয় ডুমুর বা ত্বীন ফলের ফল বড় আকারের, গোলাকার, হলুদ বা লাল রঙের এবং মিষ্টি স্বাদের। এর পাতা বড় এবং বৃত্তাকার। গাছ তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। এই ফলটি মধ্যপ্রাচ্যে অনেক পাওয়া যায়।
 
কাক ডুমুরের ফল ছোট আকারের, চকচকে, সবুজ বা কালো রঙের এবং তিক্ত স্বাদের। এর পাতা ছোট এবং শিরিশ কাগজের মত খসখসে। গাছ বড় হয় এবং লতার মত অন্য গাছের উপরে বেড়ে উঠে। এই ফলটি এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়।

জগডুমুর বা যজ্ঞডুমুরের ফল বড় আকারের, চকচকে, হলুদ বা লাল রঙের এবং তিক্ত স্বাদের। এর পাতা বড় এবং বৃত্তাকার। গাছ বড় হয় এবং কান্ডের গায়ে ফল জন্মে। এই ফলটি মধ্যপ্রাচ্যে পাওয়া যায়।

অশ্বত্থ বা পিপলের ফল ছোট আকারের, চকচকে, সবুজ বা কালো রঙের এবং মিষ্টি স্বাদের।এর পাতা বড় এবং অগ্রভাগ সূচাল। গাছ বড় হয় এবং কান্ডের গায়ে ফল জন্মে। এই ফলটি মধ্যপ্রাচ্যে পাওয়া যায়।
আশা করি আপনি এই তথ্যগুলি দিয়ে ডুমুর চেনার উপায় জানতে পারবেন। 

শেষ কথা:

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে গেছেন ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা,অপকারিতা,ও পুষ্টিগুন সম্পর্কে জেনে গেছেন ।এখন আপনাদের উপরেই নির্ভর করবে ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা,অপকারিতা। এতক্ষন আপনারা আমাদের এই আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url