খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাসহ বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক সকল কে আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাগতম।খেজুর ফল আমাদের অনেকেরই প্রিয় একটি ফল।এই খেজুর ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে।এজন্য আজকের এই আর্টিকেলে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিৎ সে সম্পর্কে জেনে নিব। আশা করছি আপনারা এই আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাসহ বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন

আপনারা যদি কিছু সময় অপচয় করে আমাদের সাথে থাকেন তাহলে আপনারা এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।আশা করি আমরা আপনাকে এমন কিছু বিষয় পরামর্শ দিবো যা থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।

ভূমিকা:

খেজুর মধ্যপ্রাচ্যের খুবই জনপ্রিয় একটি ফল ও জাতীয় খাবার। বর্তমানে বাংলাদেশেও এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।এই জন্য এই আর্টিকেলে খেজুরের পরিচিতি,খেজুরে কি পরিমান পুষ্টি উপাদান রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।তাহলে আসুন আর দেরি না করে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেয়া যাক।

খেজুরেরপরিচিতি:

খেজুর হচ্ছে খুবই জনপ্রিয় ও সুস্বাদু একটি ফল। খেজুরের ইংরেজি শব্দ হচ্ছে“DATE FRUIT”এবংএর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ’ফিনিক্স ড্যাক্টিফিলেরা’ খেজুর সাধারনত সৌদি আরবএবংমধ্যেপ্রাচ্যের দেশ গুলোতে বেশি উৎপাদিত হয়। তবে আমাদের এশিয়া মহাদেশের বেশ কয়েক দেশে ও সীমিত পরিমানে খেজুর উৎপাদন করা হচ্ছে।

এছাড়ওখেজুরকাতার,ইরাক,ইরান,তিউনিসিয়া,মরক্ক,চীন,তুরস্ক ইত্যাদি দেশ প্রধান খেজুর উৎপাদনকারি দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। খেজুরে কি পরিমান পুষ্টিগুন রয়েছে সেটা জানার পূর্বে খেজুরে কি কি পুষ্টির উপাদান রয়েছে চলুন সেটি জেনে নিই। সাধারনত খেজুরে রয়েছে।
  • প্রোটিন
  • ক্যালরি,
  • কার্বহাড্রেট
  • ক্যাসিয়াম,
  • ফাইবার,
  • ম্যগনেসিয়াম
  • আয়রন
ইত্যাদি এছাড়া ও এতে রয়েছে ভিটামিন এ ,ভিটামিন ডি ,ভিটামিন সি ,ভিটামিন কে এবং ভিটামিন ই। এবার জেনে নেয়া যাক প্রতি২০০গ্রাম খেজুরে কি পরিমান পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
  • প্রোটিন(৩.৬২গ্রাম)
  • ক্যালরি(৫৫৪গ্রাম)
  • চর্বি(০.৩০গ্রাম)
  • কার্বহাইড্রেট(১৪৯.৯৪কিলোক্যালরি)
  • ফাইবার(১৩.৪গ্রাম)
  • সোডিয়াম(৪মিলিগ্রাম)
  • ক্যালসিয়াম(৭৮মিলিগ্রাম)
  • ম্যাগনেসিযাম(০.৫৯২মিলিগ্রাম)
  • আয়রন(১.৮মিলিগ্রাম)
  • পটাশিয়াম(১৩৯২মিলিগ্রাম)
  • ভিটামিনসি(০.৮মিলিগ্রাম)
  • ভিটামিনকে(৪.১৪মিলিগ্রাম)
  • ভিটামিনএ(১২মাইক্রগ্রাম)
  • ভিটামিনই(০.১মিলিগ্রাম)

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা:

প্রথমে আসা যাক খেজুরের উপকারিতায়:খেজুর হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, কারন খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমান ফাইবার যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে:খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে কারন খেজুরে রয়েছে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে সাহায্য করে। যে ব্যাক্তি কোষ্ঠকাঠিন্য ভুগছেন তারা যদি নিয়মিত পরিমান মত খেজুর খান তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভাব।

খেজুর শর্করা নিয়ন্ত্রন করে:খেজুর শর্করা নিয়ন্ত্রনে সাহায্যকরে কারণ খেজুরের মধ্যেগ্লাইসেমিক সূচনা খুবই কম থাকে যা রক্তের মধ্যে শর্করা কমাতে সাহায্য করে।

খেজুর হার মজবুত করে: খেজুর হার মজবুত করে কারণ খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম,ফসফরাস,যা হারের সমস্য দূর করে হাড় কে মজবুত ও শক্তিশালি করতে সাহায্য করে।

খেজুর মস্তিস্ককে তীক্ষ করে:খেজুর মস্তিস্ককে তীক্ষ করে অথাৎ মস্তিস্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াই।আলঝেমারের মতো নিউরোডিজেনা রোগের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে। কারন খেজুরের মধ্যে আছে ভিটামিন বি এবং কোলাজের যেটা স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য কর।

খেজুর ত্বকের জন্য উপকারি :খেজুর ত্বকের জন্য খুবই উপকারি একটা ফল কারণ খেজুরে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি যা ত্বক সুস্থ রাখে এবং ত্বক নরম করে। 

পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:খেজুর পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ।প্রতিদিন নিয়ম মত সঠিক পরিমানে খেজুর খাওয়ার ফলে পুরুষের শুক্রাণু গুনগতমান বৃদ্ধি হবে। খেজুর এস্ট্রাডিওল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড দ্বারা লোড করা হয়,যা শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

খেজুর চুলের জন্য খুবই উপকারী;খেজুর চুলের জন্য খুবই উপকারী কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমান আয়রন যা চুল মজবুত করতে সাহায্য করে।

রক্তশূন্যতার জন্য উপকারী খেজুর:রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতার জন্য খুবই উপকারি উপাদান হলো খেজুর কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমান আয়রন।যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য কর। তাই যেসব ব্যাক্তি রক্তশূন্যতায় ভুগেন তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারি একটি ফল।

খেজুর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে;খেজুর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্যকারী উপাদান হিসাবে কার্যকারী।

হার্ট সুস্থ রাখে:খেজুর আমাদের শরীরের হার্ট কে সুস্থ রাখতে সাহায্য কর। কেননা খেজুর খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্র বাড়িয়ে দেয় আর খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্র কম করে । যা আমাদের হার্টে প্রতিরোধ হিসাবে সাহায্য কর।এজন্য খেজুর হার্টের রুগীদের খুবই উপকারী একটি ফল।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:খেজুরে রয়েছে অধিক পরিমানের এন্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো উন্নত করে তোলে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে। খেজুরে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে ডাযাবেটিকস নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে।
তবে ডায়াবেটিকস রোগীরা নরমাল খেজুর না খেয়ে যে গুলো শুকনো খেজুর রয়েছে সেগুলো খেলে বেশী উপকারে আসবে

অপকারিতা :অতিরিক্ত মাত্রয় খেজুর খাওয়ার ফলে ওজনবৃদ্ধি হতে পারে।অতিমাত্রয় খেজুর খাওয়ার ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।কারণ খেজুরের মধ্যে আছে বিপুল পরিমানের পটাশিয়াম।আতিমাত্রায় খেজুর খেলে বদ হজম হতে পারে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্য হতে পারে।

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিৎ:

এটা অনেকের মধ্যে প্রশ্ন জাগে।আপনি দিনে ৪ থেকে ৫ খেজুর খেতে পারেন।প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুর বা ৪ থেকে ৫টা খেজুর খেলে অনেক ক্যালোরি পাওয়া যাবে।খেজুর খাওয়া নির্ভর করবে আপনার শারীরিক সক্ষমতার উপর যেমন আপনি যদি ডায়েটের মধ্যে থাকেন।


তাহলে বেশী পরিমনে খেজুর খেলে আপনার ওজন কমবে না বরং বাড়বে । আবার আপনার যদি অ্যালার্জির সমস্য থাকে তাহলে আপনি দিনে ৪ থেকে ৫টা খেজুর খাওয়া উত্তম।সবচাই তে ভালো প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ টা বা ১০০ গ্রাম করে খেজুর খাওয়া। আশা করছি ব্যপার টা বুঝতে পেরেছেন।

উপসংহার:

আজ আমরা এ আর্টিকেল টিতে জেনে নিলাম খেজুর খেলে কি উপকার এবং কি অপকার। এছাড়া আমরা আরো জানলাম আমাদের দিনে কয়টা করে খেজুর খাওয়া উচিৎ।এছাড়া আরো জানলাম খেজুরের বৈজ্ঞানিক নাম এবং খেজুরে কি পরিমানে পুষ্টিগুন থাকে সে বিষয়টি।

আশা করছি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেল টি ভালো লেগেছে এবং বোধগম্য হয়েছে। যদি কো প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। যারা আমাদের এ আরর্টিকেল টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এখানে শেষ করছি ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url