গোবাদি পুশুর বিভিন্ন রোগ ও রোগের লক্ষন:

ভুমিকা:

সুধি পাঠক বৃন্দ গবাদি পশুর কিছু রোগ ও রোগের লক্ষণ এই দুটি মূল টপিক নিয়ে কিছু জানাবো। আপনি যদি গবাদি পশুর বিভিন্ন রোগ ও লক্ষণ না জেনে থাকেন। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য কারণ এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ শুরু হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে। আপনি খুব সহজেই গবাদি পশু বিভিন্ন রোগ ও রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
গোবাদি পুশুর বিভিন্ন রোগ ও রোগের লক্ষন:


গরু আমাদের অনেক উপকারে আসে। কিন্তু এসব পশু মানুষের মতো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। রোগ আক্রান্ত পশুর দুধ মাংস এবং কর্ম ক্ষমতা কমে যায়।অনেক পশু যত্ন চিকিৎসার অভাবে মারা যাই।তাপস পালনকারী রোগ। সম্পর্কের সাধারণ জ্ঞান থাকা উচিত।

রোগ :

স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের বিচ্যুতিকে রোগ বলা হয়। রোগাক্রান্ত পশুর খাদ্য গ্রহণ কবে যাবে। পশু ঝমাতে থাকবে। প্রশাব পায়খানায় সমস্যা হয়। অনেক ক্ষেত্রে এদের শরীরের লোম খাড়া দেখায় ও তাপ বেড়ে যায়। গবাদি পশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।এদের রোগসমূহকে চার ভাগে ভাগ করা যায় যেমন

সংক্রামক

  • পরজীবী জনিত রোগ
  • অপুষ্টিজনিত রোগ
  • অন্যান্য সাধারন রোগ

সংক্রামন রোগ :

যে সকল রোগ আক্রান্ত পশু হতেসুস্থ পশুর দেহে সংক্রামিত হয় তাকে সংক্রামকরোগ বলে।উল্লেখিত রোগের মধ্যে সংক্রামক রোগ সবচাইতে বেশি মারাত্মক। সংক্রামক রোগের মধ্যে আবার ভাইরাস জনিত রোগ পশুর বেশি ক্ষতি করে থাকে। যেমন ক্ষুরা রোগ জলাতঙ্ক গোসন্ত ইত্যাদি। 
ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগের মধ্যে গবাদি পশুতে বাদলা,তারকা, গোলাফোলা, ওলান ফোলা।
বাছুরের নিউমোনিয়া ডিপথেরিয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

নিম্নে কয়েকটি রোগের কারণ লক্ষণ দেওয়া হলো :

খুরা রোগ :সকল জোড়া খুর বিশিষ্ট গবাদি পশুর রোগে আক্রান্ত হয়। এটি একটি ভাইরাস জনিত সংক্রামক রোগ।লালা খাদ্যদ্রব্য ও বাতাসের মাধ্যমে সুস্থ প্রাণীরা সংক্রামিত হয়।

রোগের লক্ষণ :
  • পশুর খুরায়, মুখে, ও জিব্বায় ফোসকারমত দেখা যায়।
  • পরে ফোসকা থেকে ঘা হয় এবং মুখ হতে লালা ঝরে।
  • তাপমাত্রা বাড়ে ও খাবারের অরুচি হয়ে।ধীরে ধীরে পশু দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • অনেক সময় পশু মারা যায় কম বয়স্ক পশু বা বাছুরের মৃত্যুর হার বেশি।
বাদলা:গবাদি পশুর ৬মাস থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত এই রোগ হতে পারে দেখা যায় এটি একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রামক ব্যাধি।ক্ষতস্থানে মলের মাধ্যমে রোগ ছড়ায়।

রোগের লক্ষণ :বাদলা রোগে আক্রান্ত হলে পশুর নিমোক্ত লক্ষনগুলো দেখা যায়।
আক্রান্ত পশু খুড়িয়ে হাটে।
  • শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে যায় ব্যথা অনুভব করে।
  • ফোলা স্থানে পচন ধরে ও গবাদি পশু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়।
  • আক্রান্ত স্থনে চাপ দিলে পচা পচা শব্দ হয়।
  • শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রী থেকে ১০৫ ডিগ্রী বেড়ে যায়।
  • মৃত পশুর নাক মুখও পায়ুপথ দিয়ে রক্ত নিগৃত হয়।

পরজীবী জনিত রোগ :

যেসব ক্ষুদ্র প্রাণী বড় প্রাণীর দেহে আশ্রয় নেয় তাদের কে পরাজীবি বলে। এরা আশ্রয় দতার দেহে থেকে খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকে এবং বংশবিস্তার করে।পরজীবীকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়বহি:পরজীবী -উকুন মশা মাছি আঠালি মাইট ইত্যাদিপশুর চামড়ার উপরে বাস করে এবং দেহ হতে রক্ত শোষণ করে পশুর ক্ষতি করে।

দেহভ্যন্তরেরপরজীবী :এরা পশুর দেহের ভেতর বাস করে যা কৃমি নামে পরিচিত।কৃমি দেখতে পাতা,ফিতা গোল বলে এদেরকে পাতা কৃমি,ফিতা কৃমি ও গোল কৃমি বলা হয়। এর আশ্রয় দাতার দেহের ভিতর হতে পুষ্টি গ্রহণ করে পশুকে রোগা আক্রান্ত করে তোলে।

অপুষ্টির জনিত রোগ :আমিষ, শর্করা, স্নেহ, ভিটামিন খনিজ পদার্থ পানি ইত্যাদি যেকোনো একটি পুষ্টি উপাদানের অভাবে গবাদি পশুর রোগ হলে তাকে অপুষ্টিজনিত রোগ বলা হয়ে থাকে।
মানুষ ও গবাদিপশুর শরীরে খাদ্যের অন্যান্য উপাদানের তুলনায় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ খুবই কম পরিমাণে দরকার হয়। 
প্রধানত এই দুটি পুষ্টি উপাদানের অভাবে পশু অপুষ্টির জন্য তো রোগী বেশি আক্রান্ত হয়। যেমন দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, দৈহিক বৃদ্ধি না হওয়া, তখন অমসৃণ হওয়া, দেরিতে দাঁত উঠাা, হার বেঁকে যাওয়া, দুধ জ্বর ইত্যাদি।

অন্যান্য সাধারণ রোগ :

অন্যান্য সাধারণ রোগের মধ্যে পেট ফাঁপা, উদরাময় ও বদলে হজম উল্লেখযোগ্য। সাধারণত খাদ্যে অনিয়ম,পচা বাসি খাদ্য ও দূষিত পানির কারণে এ ধরনের রোগ হয়ে থাকে। বাছুর কে খাদ্য সরবরাহের সময় এ বিষয়গুলো প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা দরকার।

গরুর রোগ হলে করণীয়:
  • পশুতে রোগ দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
  • রোগের লক্ষণ দেখার সাথে সাথে অসুস্থ পশুকে সুস্থ পশু দল থেকে আলাদা করতে হবে
  • অসুস্থ পশুকে চিকিৎসা প্রাদান করতে হবে
  • অসুস্থ পশুকে আলাদা ঘরে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রয়োজনে অসুস্থ পশুর রক্ত ও মলমূত্র পরিক্ষা করার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • রোগাক্রান্ত পশুকে বাজারজাত না করা।

উপসংহার:

উপরিউক্ত আরির্টিকেলের মাধ্যমে আমরা গোবাদিপশুর রোগ ও লক্ষন সম্ভন্ধে জেনেছি পরিশেষে গবাধিপশু তথ্য সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার মূল্যবান মতামত জানাবেন প্রিয়জনদের সাথে শিয়ার করার অনুরোধ রইল।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url